• শিরোনাম

    বৃটিশ পার্লামেন্টের বাইরে সন্ত্রাসী হামলা, গোলাগুলি, নিহত ৪, রাজপ্রাসাদের গেট বন্ধ

    | বুধবার, ২২ মার্চ ২০১৭

    বৃটিশ পার্লামেন্টের বাইরে সন্ত্রাসী হামলা, গোলাগুলি, নিহত ৪, রাজপ্রাসাদের গেট বন্ধ

    বৃটিশ পার্লামেন্টের বাইরে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এতে কমপক্ষে চার জন নিহত হয়েছে। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। এ ঘটনাকে পুলিশ ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। পুলিশকে ছুরিকাঘাত করা এক হামলাকারী নিহত হয়েছে। নিহত হয়েছে এক নারীও। এ সময় পার্লামেন্টে অধিবেশন চলছিল। ভিতরে অবস্থান করছিলেন এমপিরা ও প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। তবে প্রধানমন্ত্রী নিরাপদে আছেন। পার্লামেন্টের বাইরে থেকে যখন গোলাগুলির শব্দ হচ্ছিল তখন তাকে একটি জাগুয়ার গাড়িতে করে দ্রুত নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় এমপিদেরকে ভিতরে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।  দৃশ্যত চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয়েছে বৃটিশ পার্লামেন্টকে। আকাশে টহল দিচ্ছে হেলিকপ্টার। বৃটেনজুড়ে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। স্থগিত করা হয়েছে পার্লামেন্টের অধিবেশন। ওয়েস্টমিনস্টারে পাতাল স্টেশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বাসের রুট পরিবর্তন করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বাকিংহাম রাজপ্রাসাদের গেট। স্কটিশ পার্লামেন্টে স্বাধীনতা নিয়ে গণভোটের ওপর বিতর্ক স্থগিত করা হয়েছে। সেখানেও বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেউ এ হামলার কথা স্বীকার করে নি। ঘটনার আকস্মিকতায় যুক্তরাজ্যকে সাহায্য দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।  এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি, স্কাই নিউজ, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। ইন্ডিপেন্ডেন্ট তার খবরে বলেছে, নিহত হয়েছেন দু’জন। মারাত্মক আহত হয়েছেছন অন্য কয়েকজন। পার্লামেন্টের বাইরে এক ব্যক্তিকে গুলি করা হয়েছে। ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে জনতার ভিড়ে গাড়ি উঠিয়ে দেয় হামলাকারীরা। এতে ওই দু’জন নিহত হয়েছে বলে বলা হচ্ছে। তবে হতাহতের নিশ্চিত কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে না তাৎক্ষণিকভাবে। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র শন স্পাইসার নিশ্চিত করেছেন যে, এ ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে। ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ৩০ গজ দূরে ছিলেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। ‘টেরর এটাক অ্যাট ইউকে পার্লামেন্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ এ হামলাকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে মনে করছে। কেন্দ্রীয় লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে একজন নারী নিহত হয়েছেন। হামলাকারীদের একজন ওই ব্রিজের ওপর দিয়ে এলোপাতাড়ি গাড়ি চালাতে থাকে। এতে পথচারীদের অনেকে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। হামলাকারীর ওই গাড়িটি রেলিংয়ের ভিতর গিয়ে দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে যায়। সেন্ট থমাস হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেছেন, বেশ কিছু মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের কয়েকজনের ক্ষত ভয়াবহ। এমপিরা বলেছেন, তারা তিন থেকে চার দফা গুলির শব্দ শুনেছেন। পার্লামেন্টের ভিতরে স্টাফদের অফিসের ভিতরে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। হাউজ অব কমন্সের নেতা ডেভিড লিডিংটন এমপিদের বলেছেন, হামরাকারীকে সশস্ত্র পুলিশ সদস্যরা গুলি করেছে। ওদিকে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের রাজনীতি বিষয়ক সম্পাদক টিম পিক টুইটে বলেছেন, তীব্র বিস্ফোরণের শব্দ। তারপর আর্তনাদ। তারপরেই গুলির শব্দ। সর্বত্রই সশস্ত্র পুলিশ। প্রেস এসোসিয়েশনের রাজনীতি বিষয়ক সম্পাদক অ্যানড্রু উডকক এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি নিজের অফিসের জানালা দিয়ে পুরো ঘটনা দেখেছেন। তিনি বলেছেন, বাইরের দিক থেকে তীব্র চিৎকার ও আর্তনাদ শুনতে পাই। তারপর বাইরে তাকাই। দেখতে পাই ব্রিজ স্ট্রিট থেকে পার্লামেন্ট স্কয়ারের দিকে দৌড়ে যাচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ জন মানুষ। দেখে মনে হচ্ছিল কোনো কিছু থেকে তারা দৌড়ে পালাচ্ছিল। তারা ক্যারিজ গেটস এলাকায় নিরাপত্তা প্রবেশপথে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের কাছে পৌঁছে। এ সময় অকস্মাৎ ভিড়ের ভিতর থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসে একজন। সে খোলা প্রাঙ্গণে চলে যায়। দেখে মনে হচ্ছিল সে রান্নাঘরে ব্যবহারের লম্বা একটি ছুরি ধরে ছিল। শুনতে পাই শব্দ, সেটা গুলির শব্দের মতো। এরপরেই দেখতে পাই মাটিতে পড়ে আছে দু’জনন। অন্যরা দৌড়ে তাদেরকে সাহায্য করতে এগিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসে সশস্ত্র পুলিশ। আমি শুনতে পাই তারা লোকজনকে খোলা প্রাঙ্গণে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছে। হার্ভার্ডস সেন্টার ফর ইউরোপিয়ান স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো র‌্যাডোস্লাউ সিকোরস্কি এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন। তিনি এর একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন টুইটারে। তাতে দেখা যায়, ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজের ওপর রাস্তায় পড়ে আছে আহত মানুষ। তিনি লিখেছেন, ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজের ওপর একটি গাড়ি কমপক্ষে ৫ জন মানুষকে যেন মই দেয়ার মতো ডলে রেখে গেছে। ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন বলেছে, পুলিশি অনুরোধে ওয়েস্টমিনস্টারে পাতাল স্টেশনগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বাসগুলো চলাচলের রুট পাল্টে দেয়া হয়েছে। ওদিকে হামলার সময় স্কটল্যান্ড পার্লামেন্টে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা প্রশ্নে দ্বিতীয় গণভোট নিয়ে বিতর্ক হচ্ছিল। সঙ্গে সঙ্গে স্থগিত করে দেয়া হয়েছে তা। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের পর বৃটিশ সরকার মঙ্গলবার মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম প্রধান ৬টি দেশ থেকে সরাসরি বৃটেনে যায় এমন ফ্লাইটে ল্যাপটপ, ট্যাব সহ আকৃতিতে বড় এমন ইলেক্ট্রনিক পণ্য নিষিদ্ধ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, আল কায়েদার সন্ত্রাসী হামলার হুমকি থাকার জন্য এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

    Comments

    comments

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ

  • ফেসবুকে চিনাইরবার্তা.কম