• শিরোনাম

    ফেনী হামলা: আদালতে বিএনপি কর্মীর স্বীকারোক্তি

    সিবিবার্তা অনলাইন ডেস্কঃ | শুক্রবার, ০৩ নভেম্বর ২০১৭

    ফেনী হামলা: আদালতে বিএনপি কর্মীর স্বীকারোক্তি

    কক্সবাজার সফর শেষে ঢাকায় ফেরার পথে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর ফেনীর মহীপাল অতিক্রম করার পর বিএনপি কর্মীরাই দুই বাসে হামলা করেছে বলে আদালতে বলেছেন দলের স্থানীয় এক কর্মী। তিনি কয়েকজনের নামও প্রকাশ করেছেন।

    বুধবার সন্ধ্যায় ফেনীর একটি আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে এ তথ্য জানান আবুল কাশেম মিলন নামের ওই বিএনপি কর্মী। এই ঘটনায় করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর শ্যামল চন্দ্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিএনপি কর্মী মিলনকে বুধবার সন্ধ্যায় আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে জবানবন্দিতে তিনি জানায়, মঙ্গলবার খালেদা জিয়া কক্সবাজার থেকে ফেরার পথে তাকে স্বাগত জানাতে বিএনপি কর্মীরা যে মোটর সাইকেল বহর নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে কয়েকজন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি বাসে পেট্রল বোমা ছুড়ে মারে।

    তদন্ত কর্মকর্তা জানান, এই ঘটনায় জড়িত হিসেবে ছয়-সাত জনের নামও জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন মিলন। তবে তদন্তের স্বার্থে এদের কারও নাম বলতে রাজি হননি এই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি শুধু বলেন, ‘জড়িতদের ধরতে পুলিশ চেষ্টা চলছে।’

    ফেনী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন আহমেদ মিষ্টার জানিয়েছেন, বোমা হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার মিলন বিএনপি কোন পর্যায়ের দায়িত্বে নেই। তিনি সমর্থক মাত্র।

    গত শনিবার (২৮ অক্টোবর) মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উখিয়ার উদ্দেশে রওয়ানা হন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি ফেরেন মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর)। এই সফরে যাওয়া এবং আসার পথে দুই বারই ফেনীতে হাঙ্গামা হয়।

    যাওয়ার পথে ফেনীর মোহাম্মদ আলী এলাকায় বিএনপি নেত্রীর বহরে থাকা গণমাধ্যম কর্মীদের গাড়িতে হামলা হয়। হামলাকারীরা বেশ কিছু গাড়ির কাচ ভেঙে দেয়। এই ঘটনার জন্য বিএনপি দায়ী করেছে আওয়ামী লীগকে।

    তবে ‘হামলা পরিকল্পনার’ বিষয়ে দুই ব্যক্তির মধ্যে হওয়া কথোপকথনের রেকর্ড প্রকাশের পর আওয়ামী লীগ পাল্টা অভিযোগে বলেছে, বিএনপি নিজেরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। ওই কথোপকথনে হামলার নির্দেশদাতা এক ব্যক্তি ফেনীর আঞ্চলির ভাষায় কথা বলা জনৈক মোবারককে সব নির্দেশনা দেন। যেন খালেদা জিয়া বা বিএনপি নেতাদের গাড়িতে ঢিল না পড়ে এবং কেবল যেন সাংবাদিকদের গাড়িতে হামলা হয়, সেটা নিশ্চিত করতে বলেন ওই ব্যক্তি। পরে মোবারক তাকে নিশ্চয়তা দেন, সব কিছু পরিকল্পনা মাফিক হবে। আর ছবি তোলার জন্য স্থানীয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকে ভাড়ায় আনার কথাও জানান তিনি।

    আওয়ামী লীগ জানিয়েছে এই নির্দেশদাতা চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন। যদিও শাহাদাৎ দাবি করেছেন, তার কণ্ঠস্বর নকল করা হয়েছে বদনাম করার জন্য।

    খালেদা জিয়া কক্সবাজার থেকে ফেরার পথেও ফেনীর মহীপালে বিশৃঙ্খলা হয়। গাড়িবহর এলাকা অতিক্রম করার পর দাঁড়িয়ে থাকা দুটি বাসে বোমা জাতীয় বস্তুর বিস্ফোরণ ঘটে এবং এতে বাস দুটিতে আগুন ধরে যায়।

    এই ঘটনার জন্যও বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ পরস্পরকে দায়ী করে আসছে। আর ফেনী মডেল থানার উপপরিদর্শক নুরুল ইসলাম ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে ৩৫-৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মামলা করেছেন। এতে ফেনী কৃষকদল সভাপতি আলমগীর চৌধুরী, জেলা ছাত্রদল সভাপতি নঈম উল্লাহ চৌধুরী বরাত, সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন মামুনসহ ছাত্রদল-যুবদলের ২৯ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পরে বুধবার রাতে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

    এদিকে খালেদা জিয়া কক্সবাজার যাওয়ার পথে ফেনীতে সাংবাদিকদের বহরে হামলার ঘটনায় কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক এ কে এম নজিবুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে মামলা করেছেন।

    সূএঃ ঢাকা টাইম্স

    Comments

    comments

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ

  • ফেসবুকে চিনাইরবার্তা.কম