• শিরোনাম

    ষোড়শ সংশোধনী রায়ের বিষয়ে জনমত গঠনের পরামর্শ

    সিবিবার্তা ডেস্কঃ | মঙ্গলবার, ০৮ আগস্ট ২০১৭

    ষোড়শ সংশোধনী রায়ের বিষয়ে জনমত গঠনের পরামর্শ

    সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বাতিলের রায় নিয়ে আজ সোমবার মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এ বিষয় নিয়ে এক অনির্ধারিত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের বিষয়ে মন্ত্রিসভার সদস্যরা ক্ষুব্ধ মতামত ব্যক্ত করেন বলে জানা গেছে।

    তারা রায়ে ‘আপত্তিকর’ বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেয়ার কথা বলেন। এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বরাবর লিখিত আবেদন করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়কে একটি সংবাদ সম্মেলন করে বক্তব্য রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।

    এ নিয়ে আইনমন্ত্রী আগামী বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলন করে রায় নিয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরবে বলে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানায়।

    একই সাথে এ রায়ের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করার জন্যও মন্ত্রিসভায় পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

    জানা গেছে, ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত বৈঠক শেষে প্রায় দুই ঘণ্টা আলোচনা হয়। উপস্থিত সবাই রায়ের বিপক্ষে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এ রায়ে ক্ষুব্ধ মন্ত্রিপরিষদের সবাই। বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক রায়ের কপি উত্থাপন করেন। তিনি রায়ের বিভিন্ন পয়েন্ট উল্লেখ করে বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে অপ্রাসঙ্গিক অনেক কিছু আনা হয়েছে, যা প্রয়োজন ছিল না। যেমন পঞ্চম ও ষষ্ঠ সংশোধনীও টেনে আনা হয়েছে। এ রায়ে সংসদকে ‘ইমম্যাচিউরড’ বলা হয়েছে। এমনকি ২০১৪ সালে যে নির্বাচন হয়েছিল, সেটাকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ বলা হয়েছে। এছাড়াও রায়ে আরো অনেক ‘আপত্তিকর’ বিষয় আনা হয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী।’

    নাম না প্রকাশ শর্তে মন্ত্রিসভায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একজন মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘মন্ত্রিপরিষদের ওই অনির্ধারিত সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, সরকারের পক্ষ থেকে এ রায়ে যেসব ‘আপত্তিকর’ বক্তব্য দেয়া হয়েছে তা এক্সপাঞ্চ করতে প্রধান বিচারপতির কাছে লিখিত আবেদন করা হবে। এছাড়া জনগণের অধিকার রক্ষায় প্রয়োজনে নতুন আইন করার বিষয়েও একমত হয়েছেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা।

    জানা গেছে, বৈঠকে বলা হয়, এ রায়ের কোথাও কোথাও সরকার এবং জনগণ সম্পর্কে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করা হয়েছে। কাজেই যেখানেই সুযোগ পাওয়া যাবে সেখানে এসব বিষয় জনগণকে জানানো হবে। কারণ, সংসদ সদস্যরা জনগণের প্রতিনিধি। জনগণের এসব বিষয় জানার অধিকার আছে।

    প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় গত ১ আগস্ট প্রকাশিত হয়।

    ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানটি তুলে দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন এনে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেয়া হয়; যেটি ১৯৭২ সালের সংবিধানে ছিল।

    সংবিধানে এই সংশোধনী হওয়ায় মৌল কাঠামোতে পরিবর্তন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করবে- এমন যুক্তিতে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়।

    ওই রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর রুল জারি করেন। গত বছরের ১০ মার্চ মামলাটির চূড়ান্ত শুনানি শেষে ৫ মে তা অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন আদালত।

    পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পর ওইদিনই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ার পর এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।

    বিদেশে আরো ৭ মিশন
    বিদেশে নতুনভাবে আরো সাতটি বাংলাদেশি মিশন স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। একই সাথে ইতোমধ্যে বিদেশে স্থাপিত ১৭টি বাংলাদেশ মিশন ভূতাপেক্ষভাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

    আজ সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।

    বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান।

    মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, নতুন মিশনগুলো হবে আফগানিস্তানের কাবুল, সুদানের খার্তুম, সিয়েরালিওনের ফ্রি টাউন, রোমানিয়ার বুখারেস্ট, ভারতের চেন্নাই, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ও কানাডার টরেন্টোতে।

    শফিউল আলম বলেন, ‘ইতোমধ্যে চালু হওয়া ১৭টি মিশন হলো- এথেন্স, মিলান, মুম্বাই, ইস্তাম্বুল, লিসবন, কুনমিং, বৈরুত, মেক্সিকো সিটি, ব্রাসিলিয়া, পোর্ট লুইস, কোপেনহেগেন, ওয়ারশ, ভিয়েনা, আদ্দিস আবাবা, আবুজা, আলজিয়ার্স ও গৌহাটি।’

    তিনি বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে এগুলো কাজ করছে। এগুলো বিভিন্ন কনসাল অফিস। রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী নিয়ম হলো, এ অফিসগুলো খোলার আগে মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু এই কূটনৈতিক অফিসগুলো স্থাপনের অনুমোদন নেয়া হয়নি ভুলে। এজন্য এই ১৭টির ভূতাপেক্ষ অনুমোদন নেয়া হয়েছে।’

    মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এরমধ্যে (ইতোমধ্যে চালু ও নতুনগুলো) কয়েকটি মিশন আগে থাকলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবার চালু করা হলো।’

    ব্রাসিলিয়া, ওয়ারশ, বুখারেস্ট, সিডনিতে বাংলাদেশী মিশন আগে ছিল বলেও জানান তিনি।

    Comments

    comments

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ

  • ফেসবুকে চিনাইরবার্তা.কম