• শিরোনাম

    সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

    | সোমবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৬

    সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

    ভিডিও কনফারেন্সে রাজশাহী বিভাগের জনগণের সঙ্গে মতবিয়

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে দেশের উন্নয়নের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার আহবান জানিয়ে বলেছেন, দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে অব্যাহত রাখার জন্য শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখাটা জরুরি। সংখ্যালঘুদের সার্বিক নিরাপত্তা দেয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসকে আমরা প্রশ্রয় দেব না। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। কারণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছাড়া একটি দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বিকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদবিরোধী উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে মতবিনিময়কালে একথা বলেন।

    তিনি বলেন, আমি একটু স্মরণ করিয়ে দিতে চাই বিএনপির কোনো এক নেতা কিছুদিন আগে বলেছিলেন- ‘আওয়ামী লীগ আন্দোলনের কি দেখেছে, নভেম্বর মাসে হবে আসল আন্দোলন।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের আন্দোলন যদি হয় আবারও এই মানুষ খুন করা, মানুষের ঘরবাড়ি পোড়ানো, সংখ্যালঘুদের ওপর আঘাত-নির্যাতন করা এবং এর মাধ্যমে দেশের সম্প্রীতি নষ্ট করা- সেই আন্দোলন কোনোদিনও মানুষের সমর্থন পাবে না। এই পথ জনগণের কল্যাণ বয়ে আনবে না।

    প্রধানমন্ত্রী ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সবার প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই জনগণের প্রতি- সবাই আমার ডাকে সাড়া দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। যে কারণে আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ অন্তত নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। কিন্তু এখনও যেসব ঘটনা ঘটছে সেগুলো যেন আর না ঘটে। তিনি বলেন, আমার আহবান থাকবে- আমাদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে আমাদের সর্বতো নিরাপত্তা দিতে হবে। এটা আমাদের সবার দায়িত্ব।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আমাদের ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম। প্রত্যেক ধর্মের মূল বাণীও তাই। এখানে সব ধর্মের মানুষ তাদের ধর্ম-কর্ম পালন করতে পারবেন। এটাই ইসলামের কথা- এটাই আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কথা এবং আমরা সেটাই মেনে চলি। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মানুষ খুন করা কিন্তু ইসলামের পথ না।

    প্রধানমন্ত্রী এদিন রাজশাহী বিভাগের ৫টি স্থানের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন। বিভাগের ৮টি জেলার ২ হাজার ৯৮১টি গ্রামে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই ভিডিও কনফারেন্সের অনুষ্ঠানটি দেখানো হয়। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে গণভবনে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক কবির বিন আনোয়ার।

    প্রধানমন্ত্রী বিএনপির আন্দোলনের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ হত্যা এবং মানুষকে পুড়িয়ে মারা এটা কখনও মনুষ্যত্বের কাজ নয়। এ কথা সব সময় সবাইকেই মনে রাখতে হবে। আমি চাই আমাদের দেশের সব সময় সম্প্রীতি বজায় থাকবে, দেশ উন্নত হবে। তিনি বলেন, আজকে বিশ্ববাসী স্বীকার করে- বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে অনেকে ঈর্ষান্বিত হয়। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি ৪৫ বছর হয়ে গেছে। আজকে যদি জাতির পিতা বেঁচে থাকতেন তাহলে এই বাংলাদেশ আরও বহু আগেই উন্নত হতে পারত। কিন্তু তার সেই অসমাপ্ত কাজ আমাদের সম্পন্ন করতে হবে। মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হবে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ উন্নত জীবন পাবে, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।

    প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলের উল্লেখ করে বলেন, আমাদের মনে আছে রাজশাহীতে বাংলা ভাই সৃষ্টি। প্রকাশ্য দিবালোকে সন্ত্রাসীরা মিছিল করছে ট্রাকে। পুলিশ তাদের পাহারা দিচ্ছে। বিএনপির মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী তাদের মদদ দিচ্ছে। তারা প্রকাশ্যে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, সেটা আমরা দেখেছি। আর এই রাজশাহীবাসীই সেটা প্রত্যক্ষ করেছেন- মানুষ হত্যা করে কিভাবে পায়ে বেঁধে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকে ৮ টুকরা করা হয়েছে। নিরীহ মানুষ, পুলিশ হত্যা করেছে।

    প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশ্যে বলেন, এদের চরিত্র কোনোদিনও শোধরাবে না। আর এই সন্ত্রাসের পথ বেয়েই আজকে এসেছে- নতুন উপসর্গ, ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করা। তিনি বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাই মিলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য এর আগেও আমি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশের ৮টি বিভাগের ৬৪টি জেলার সব শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। তখনও আমি আহবান করেছিলাম, জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে দেশবাসীকে আহবান করেছিলাম যে, সবাই সম্মিলিতভাবে আমাদের প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ যেন বাংলার মাটিতে স্থান না পায়।

    যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে তারা জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারে না

    বগুড়া ব্যুরো : বগুড়া শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে আয়োজিত ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন, বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহসভাপতি স্বপন চক্রবর্তী, শেরপুর পৌর মেয়র আবদুস সাত্তার, জেলা ইমাম-মোয়াজ্জেম সমিতির সভাপতি মাওলানা আবদুল কাদের ও জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন। প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুন বগুড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং একটি কেন্দ্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নেওয়ার অনুরোধ জানালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে অন্যান্য বিষয়ের মতো অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে বা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে গিয়ে ফরম পূরণ ও ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বগুড়ায় বেসরকারিভাবে কেউ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে তাকে সার্বিক সহযোগিতা দেয়া হবে। মেয়র আবদুস সাত্তার বগুড়ার করতোয়া নদী খনন এবং বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ স্থাপনের দাবি জানান। ভিডিও কনফারেন্স শুরুর আগে অন্যান্যের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মমতাজ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান মজনু, বগুড়া-৫ আসনের এমপি আবদুল মান্নান, বগুড়া সদরের এমপি নুরুল ইসলাম ওমর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন র‌্যাব-১২ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি শাহাবুদ্দিন খান, র‌্যাব-১২ বগুড়ার কমান্ডার মেজর এএফএম আজমল হোসেন খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল, আওয়ামী লীগ নেতা টি জামান নিকেতা, জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ডালিয়া খাতুন রিক্তা, বিলাসী রানী, শিল্পী খাতুন, হেফাজত আরা মিরা, জেলা যুবলীগ সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডাবলু, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

    নওগাঁয় প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স প্রচার

    নওগাঁ প্রতিনিধি : শনিবার বিকালে শহরের নওজোয়ান মাঠে জেলা পরিষদ ও আহ্বায়ক ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার, জাতীয় সংসদের হুইপ অ্যাডভোকেট শহীদুজ্জামান সরকার, ইসরাফিল আলম এমপি, সেলিম উদ্দিন তরফদার এমপি, সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন মনোয়ারা হক, জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট একেএম ফজলে রাব্বী, জেলা প্রশাসক ড. আমিনুর রহমান, পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক, জেলা সিভিল সার্জন একেএম মোজাহার হোসেন, পৌর মেয়র আলহাজ নজমুল হক সনি, অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন ও নিজাম উদ্দিন জলিল জনসহ বিভিন্ন সরকারি পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ সমাজের বিভিন্ন পেশার জনসাধারণ অংশগ্রহণ করে।

    চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে লোক সমাগম বেশি

    চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও শিবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবঞ্জ সরকারি হরিমোহন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ ও শিবগঞ্জ মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত কনফারেন্সিং অনুষ্ঠানে দুপুর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ আসতে থাকেন। নির্ধারিত সময়ের আগেই পুরো মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মইনুদ্দীন মণ্ডল, সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সংসদ সদস্য আবদুল ওদুদ এবং শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য গোলাম রাব্বানী অনুষ্ঠানে আগতদের অভ্যর্থনা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান ও পৌর মেয়র কারিবুল হক রাজিনসহ অন্যরা।

    কালাইয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স প্রচার কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : বিকালে পৌর শহরের কালাই ময়েন উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, ডিগ্রি কলেজ মাঠ ও মহিলা ডিগ্রি কলেজ মাঠে বড় পর্দায় ভিডিও কনফারেন্স লাইফের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সন্ত্রাসবিরোধী বক্তব্য দেখানো হয়। এ সময় কালাই ময়েন উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফাজ উদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাকিব হাসান তরফদার, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লায়লা আরজুমান্দ বানু, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা লায়লা নাসরিন জাহান, নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, রিসোর্স কর্মকর্তা আবদুস সামাদ, ময়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বকুল, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাইহান উদ্দীন প্রমুখ।

    যুগান্তর

    Comments

    comments

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ

  • ফেসবুকে চিনাইরবার্তা.কম