• শিরোনাম

    নতুন ম্যাকবুক প্রো’র সাতকাহন

    | রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৬

    নতুন ম্যাকবুক প্রো’র সাতকাহন

    বিশ্বের জনপ্রিয় প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল চলতি বছরের ২৭ অক্টোবর নতুন দু’টি মডেলের ম্যাকবুক প্রো ল্যাপটপ উন্মোচন করেছে। বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় শুরু হওয়া অ্যাপলের এই ইভেন্টে নতুন ম্যাকবুক প্রো ল্যাপটপ উন্মোচন করেন অ্যাপল প্রধান টিম কুক। নতুন ম্যাকবুকের কিবোর্ডে ব্যবহার করা হয়েছে দ্বিতীয় প্রজন্মের বাটারফ্লাই প্রযুক্তি। কিবোর্ডের ফাংশন কি-গুলো সরিয়ে আনা হয়েছে একটি ওলেড টাচবার। পাওয়ার বাটনের সাথে সমন্বয় ঘটানো হয়েছে নতুন টাচআইডি প্রযুক্তির। এর মাধ্যমে এখন আঙুলের ছাপেই খোলা যাবে এই ল্যাপটপ। ম্যাকবুক প্রোর বিস্তারিত নিয়ে লিখেছেন আহমেদ ইফতেখার

    আগের সংস্করণের ম্যাকবুক প্রো ল্যাপটপগুলোতে কয়েক ধরনের কানেকশন পোর্ট থাকলেও, সর্বশেষ সংস্করণগুলোতে শুধু এক ধরনের পোর্ট আছে। এর ফলে অন্য ধরনের কানেকটরের ডিভাইসগুলো এই ল্যাপটপে যুক্ত করতে ব্যবহারকারীদের আলাদা অ্যাডাপটারের প্রয়োজন হবে। নতুন ম্যাকবুক প্রোর কিবোর্ড থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এসকেপ কিসহ উপরের সারির কিগুলো, যোগ করা হয়েছে ‘টাচবার’ নামের ভার্চুয়াল টাচ স্ট্রিপ। এই টাচবারের ভার্চুয়াল বাটনগুলো আপনি যখন যেই অ্যাপ ব্যবহার করবেন তার ওপর নির্ভর করে বদলাবে। এর ফলে কাস্টম শর্টকাট তৈরিতে সফটওয়্যার নির্মাতাদের জন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে। আগের সংস্করণগুলোর তুলনায় নতুন ম্যাকবুক আরো দ্রুত, হালকা ও চিকন। একবার চার্যে টানা ১০ ঘণ্টা কাজ করতে পারবেন।

    নতুন সংস্করণগুলোতে অ্যাপল পুরোপুরিভাবে নতুন প্রজন্মের ইউএসবি পোর্ট ইউএসবিসির যুগে প্রবেশ করেছে। ম্যাকবুকে ইএসবিসি পোর্টকেই ম্যাকবুক প্রো ল্যাপটপগুলোতে আনা সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হিসেবে দেখছে বিশেষজ্ঞরা। আগের ম্যাকবুকগুলোতে প্রিন্টার আর মনিটরের সাথে মতো কানেকটিং ডিভাইসগুলোকে যুক্ত করতে ইএসবি-এ পোর্টের সাথে এইচডিএমআই পোর্টসহ অন্যান্য পোর্টও রাখা হয়েছিল। আর এখন চার্জিং, আলাদা স্ক্রিন ও ফটো-কার্ড রিডার যোগ করা সবকিছুতেই ইউসএবি-সি পোর্ট ব্যবহার করতে হবে। এন্ট্রি-লেভেল ম্যাকবুক প্রো মডেলটিতে ইউএসবি-সি পোর্ট রাখা হয়েছে দু’টি, আর উন্নত সংস্করণগুলোতে আছে চারটি করে।

    অবাক করার বিষয় হলো অ্যাপলের আইফোনের পাওয়ার কেবলেও ব্যবহার করা হয়েছে ইএসবি-এ কানেকটর, সেক্ষেত্রে আইফোনকে নতুন ম্যাকবুক প্রো-এর সঙ্গে যুক্ত করতে গেলেও কিনতে হবে নতুন অ্যাডাপটার। দীর্ঘমেয়াদে অ্যাপলের ইউসবি-সি পোর্টে চলে যাওয়াটা এ খাতে একটি মান তৈরিতে সহায়তা করবে। এ ক্ষেত্রে লক্ষ্যটা হচ্ছে ল্যাপটপের সঙ্গে প্রয়োজনীয় অন্য সব ডিভাইসে ইউএসবি-সি কানেকটর নিয়ে আসা, এর ফলে এক সময় আর বাড়তি অ্যাডাপটার কেনার প্রয়োজন হবে না।

    কিবোর্ডের এসকেপ কি-কেও এখন সরিয়ে এনে টাচবারে ভার্চুয়াল বাটন হিসেবে জায়গা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ফিজিক্যাল এসকেপ কি কোডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অনেকেই টাচবার ব্যবহারের পর টাচ বার ছাড়া সাধারণ কিবোর্ড ব্যবহারের সময় কিছু মিস করছেন বলে জানিয়েছেন।

    নতুন সংস্করণগুলোতে আগের ম্যাকবুক প্রো সংস্করণগুলোর মতোই ১৬ গিগাবাইট র‌্যাম ব্যবহার করা হয়েছে। প্রসেসরের গতিও রাখা হয়েছে প্রায় আগের পেশাদার ম্যাকবুকগুলোর মতো। ১৫ ইঞ্চির নতুন ম্যাকবুক প্রো’র প্রসেসর ২০১২ সালে বের হওয়া একই আকারের মডেলের তুলনায় ১০ থেকে ১৭ শতাংশ বেশি দ্রুত। কম্পিউটিং টাস্ক-এর জন্য গুরত্বপূর্ণ গ্রাফিক্স কার্ড-এর ক্ষেত্রে, নতুন ম্যাকবুক প্রো’র গতি আগের চেয়ে দ্বিগুণ। আগের চেয়ে দ্রুত স্টোরেজ ডিভাইসও।

    নতুন ম্যাকবুক প্রো হয়তো অধিকাংশ পেশাদারের জন্য যথেষ্ট ক্ষমতাধর কম্পিউটার হবে। অ্যাপল জানিয়েছে, প্রথমদিকের অর্ডার হিসেবে আগের পেশাদার নোটবুকগুলোর তুলনায় ম্যাকবুক প্রো’র চাহিদা বেশি। দু’টি আকারে আনা হয়েছে অ্যালুমিনিয়ামে তৈরি নতুন ম্যাকবুক প্রো, রাখা হয়েছে দু’টি রঙ- সিলভার আর গ্রে। ১৩ ইঞ্চির ম্যাকবুক প্রো-কে আগের সংস্করণের তুলনায় ১৭ শতাংশ পাতলা করা হয়েছে, এর ফলে এর পুরুত্ব হয়েছে ১৪.৯মিলিমিটার। আগের সংস্করণ থেকে কমানো হয়েছে ওজন, ০.২৩ কেজি কমিয়ে নতুন এই ম্যাকবুক প্রো-এর ভর করা হয়েছে ১.৩৬ কেজি।

    ১৫ ইঞ্চির ম্যাকবুক প্রো আগের সংস্করণের চেয়ে ১৪ শতাংশ পাতলা, আয়তন কমানো হয়েছে ২০ শতাংশ আর এর ভর ১.৮ কেজি। আগের সংস্করণের মতোই নতুন ম্যাকবুকে প্রো-তে রয়েছে ফোর্স টাচ ট্র্যাক প্যাড। তবে, এই ট্র্যাক প্যাড আগের চেয়ে আয়তনে দ্বিগুণ।

    নতুন ম্যাকবুক প্রো-এর ১৩ ইঞ্চি সংস্করণে আবার রাখা হয়েছে দুইটি সংস্করণ। একটি সংস্করণে ওএলইডি টাচ বার রাখা হয়েছে অপরটিতে রাখা হয়নি। টাচ বার ছাড়া ১৩ ইঞ্চির ম্যাকবুক প্রো-তে ব্যবহার করা হয়েছে ২.০ গিগাহার্টজ ডুয়াল-কোর ইনটেল কোর আই৫ প্রসেসর, সঙ্গে রাখা হয়েছে ৩.১ গিগাহার্টজ পর্যন্ত গতিসম্পন্ন টার্বো বুস্ট, ৮ জিবি মেমোরি ও ২৫৬ জিবি ফ্ল্যাশ স্টোরেজ। ২৭ অক্টোবর থেকেই এটি বাজারজাত শুরু হবে বলে জানানো হয়। আর এর দাম রাখা হয়েছে ১৪৯৯ ডলার।

    অন্য ১৩ ইঞ্চির ম্যাকবুক প্রো-তে ব্যবহার করা হয়েছে ২.৯ গিগাহার্টজ ডুয়াল-কোর ইনটেল কোর আই৫ প্রসেসর, এর টার্বো বুস্ট ৩.৩ গিগাহার্টজ পর্যন্ত গতি উঠাতে সক্ষম। মেমোরি আর স্টোরেজে অন্য ম্যাকবুক প্রো-এর সঙ্গে কোনো পার্থক্য রাখা হয়নি। সামনের দুই তিন সপ্তাহের মধ্যে এটি বাজারে ছাড়া হবে, এর দাম ধরা হয়েছে ১৭৯৯ ডলার। ১৫ ইঞ্চির ম্যাকবুক প্রো-তে রয়েছে ২.৬ গিগাহার্টজ কোয়াড-কোর ইনটেল কোর আই৭ প্রসেসর, এর টার্বো বুস্ট-এর গতি উঠতে পারে ৩.৫ গিগাহার্টজ পর্যন্ত। এতে রাখা হয়েছে ১৬ জিবি মেমোরি ও ২৫৬ জিবি ফ্ল্যাশ স্টোরেজ। এটিও সামনের দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে বাজারে ছাড়া হবে, আর এর দাম পড়বে ২৩৯৯ ডলার।

    Comments

    comments

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আসছে ‘ফেসবুক টিভি’

    ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

    আর্কাইভ

  • ফেসবুকে চিনাইরবার্তা.কম