| মঙ্গলবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৬
সৌদি আরব প্রবাসী বাংলাদেশী এক ক্লিনার একটা স্বর্ণের দোকানের বাইরে থেকে গহনাগুলোর দিকে তাকিয়ে ছিল। এই ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয় এবং তা নিয়ে অনেক উপহাস বা হাসি-তামাশা করা হয়। একজন দরিদ্র পরিচ্ছন্নতাকর্মীর এই মহামূল্যবান স্বর্ণের গহনার দিকে তাকিয়ে থাকা নিয়ে উপহাসমূলক পোস্টটি ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে।
ইন্সটাগ্রামে একজন ছবিটি পোস্ট করে লিখেছিল, ‘এই লোক শুধু দেখতেই পারবে।’আব্দুল্লাহ আল-কাহতানি নামে একজন তার ‘ইনসানিয়াত’ নামের টুইটার এ্যাকাউন্টে ছবিটি পোস্ট করে ঐ ক্লিনারের পক্ষে মানবতাবাদীদের সমর্থন কামনা করেন। আল-কাহতানি’র ঐ পোস্ট সাড়ে ৬ হাজারেরও বেশি শেয়ার হয় এবং স্বর্ণের গহনার দিকে তাকিয়ে থাকা বাংলাদেশী ঐ ক্লিনারের অবস্থান খুঁজে বের করতে সক্ষম হন অনেকেই। সৌদি প্রবাসী ঐ বাংলাদেশী ক্লিনারের নাম আব্দুল করিম। তার বয়স ৬৫ বছর এবং তিনি সৌদি আরবের রিয়াদে থাকেন। মাসে মাত্র ১৫ হাজার টাকা (বাংলাদেশী) উপার্জন করা আব্দুল করিম বলেছেন, তিনি বুঝতে পারেননি যে তার ছবি তোলা হয়েছে। তিনি বলেছেন-
‘আমি আসলে আমার কাজ করছিলাম। পৌরসভা এলাকায় পরিচ্ছন্নতার কাজ। কাজ করতে করতে একটা সময় স্বর্ণের দোকানের কাছে চলে যাই। আমি উপহার পেয়ে খুব খুশী এবং কৃতজ্ঞ।’
হ্যাঁ, যাকে নিয়ে প্রথমে এত উপহাস করা হয়েছে- সেই তার দিকেই আবার সহানুভূতির ঢেউ উপচে পড়েছে। সামর্থ্যহীনতার কারণে যে উপহাস তা এখন উপহারে রূপান্তরিত হয়েছে। উপহারের বন্যায় আব্দুল করিমের এখন ভেসে যাওয়ার উপক্রম। আল-কাহতানি জানিয়েছেন, আব্দুল করিম প্রচুর অর্থ পাচ্ছেন। তার কাছে প্রচুর চাল এবং মধু পাঠাচ্ছে লোকজন। এরই মধ্যে তিনি বাংলাদেশে যাওয়ার রিটার্ণ টিকেট পেয়েছেন। একিট আইফোন সেভেন এবং একটি স্যামসাং গ্যালাক্সি মোবাইল ফোন সেট পেয়েছেন।
এখানে ক্লিক করুন, প্রবাস কথার সাথে থাকুন
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিশেষ করে, টুইটার ব্যবহারকারী সৌদি নাগরিকরা আব্দুল করিমের কাছে উপহার পাঠানো অব্যাহত রাখার প্রতিজ্ঞা করেছেন। একজন টুইটার ব্যবহারকারী আব্দুল করিমকে ২০০০ রিয়াল দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তার চেয়েও বড় কথা হলো, যে স্বর্ণের গহনাগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকার কারণে উপহাসের শিকার হতে হয়েছে আব্দুল করিমকে, উপহার হিসেবে এক সেট স্বর্ণের গহনাও পেয়েছেন তিনি। উপহারের এই ঢেউ অব্যাহত আছে।