| রবিবার, ০৩ জানুয়ারি ২০২১
বিভিন্ন সময় আটককৃত পুরনো যানবাহনের উম্মুক্ত নিলাম নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) আশুগঞ্জ থানায় বিভিন্ন ধরনের ৪২টি যানবাহন উম্মুক্ত নিলাম হওয়ার কথা থাকলেও ৩৭টির নিলাম হয়। ওসি উন্মুক্ত নিলামের তালিকা থেকে পছন্দ মতো পাঁচটি মোটর সাইকেল সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে পরদিন শুক্রবার সকাল ১০টায় আবার পাঁচটি মোটর সাইকেল পুনঃনিলাম ডাকা হয়।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের এক অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের জেলার সব থানায় পড়ে থাকা পুরনো যানবাহনের নিলাম, নিষ্পত্তি ও ধ্বংসযোগ্য আলামতের একটি পরিসংখ্যানের তালিকা দেন।
একই দিন দিনভর জেলার প্রতিটি উপজেলায়, সব থানায় উম্মুক্ত নিলামের বিষয়ে মাইকিং করা হয়। এছাড়াও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সংবাদকর্মীদের ব্যক্তিগত ই মেইলে নিলামের বিষয়ে যানবাহনের তালিকা পাঠানো হয়। তালিকায় আশুগঞ্জ থানায় ৪২টি যানবাহনের কথা উল্লেখ করা হয়। যার মধ্যে প্রাইভেটকার ১৮টি, মোটর সাইকেল ৯টি, পিকআপ ৯টি, মাইক্রোবাস ১টি, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ১টি, রিকশা ১টি, নৌকা ১টি ও অন্যান্য যান ২টি।
এছাড়াও সরাইল থানায় ১১টি, নাসিরনগর থানায় ৯টি, বাঞ্ছারামপুর থানায় ২৫টি, নবীনগরে ৯টি, কসবায় ৬৮টি, আখাউড়ায় থানায় ৩২টি, জেলা ট্রাফিক পুলিশ ৩২টি ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ৩টি পুরানো যানবাহন নিলাম দেওয়ার কথা বলা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার জেলায় সকল থানায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পুরনো যানবাহনের নিলাম হয়।
প্রত্যেক থানায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ (ওসি) নিলামে উপস্থিত ছিলেন। প্রতিটি থানায় পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী নিলাম কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হলেও ব্যতিক্রম হয়েছে শুধু আশুগঞ্জ থানায়।
বৃহস্পতিবার আশুগঞ্জ থানায় ৯টি মোটর সাইকেলসহ ৪২টি যানের নিলাম ডাকার কথা থাকলে নিলামে তোলা হয় ৩৭টি যানবাহন। ৫টি মোটর সাইকেল নিলামে তোলা হয়নি। বিষয়টি জানাজানি হলে পরদিন শুক্রবার পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে ৫টি মোটর সাইকেলের নিলাম ডাকা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিলামে অংশ গ্রহণকারী কয়েকজন বলেন, বৃহস্পতিবার নিলামের নয়টি মোটর সাইকেল থেকে ৫টি ভালো মোটর সাইকেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরিয়ে ফেলেন। এগুলো হলো আর ওয়ান ফাইভ ব্র্যান্ডের একটি মোটর সাইকেল, পালসার ব্র্যান্ডের একটি, ১২৫ সিসি ডিসকাভার ব্র্যান্ডের একটি, ১০০সিসি ডিসকভারি ব্র্যান্ডরে দুটি মোটরসাইকেল।
বিষয়টি জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জেনে ফেলার পর শুক্রবার সকালে সরিয়ে ফেলা ওই পাঁচটি মোটর সাইকেলের পুনরায় নিলাম অনুষ্ঠিত হয়।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, এই ধরণের অভিযোগ সত্য নয়।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল ও আশুগঞ্জ সার্কেল) আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সন্ধ্যা হয়ে যাওয়া ও সময় স্বল্পতার কারণে বৃহস্পতিবার পাঁচটি মোটর সাইকেলের নিলাম করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে আদালত থেকে অনুমতি নিয়ে শুক্রবার সকাল ১০টায় পাঁচটি মোটর সাইকেলের নিলাম করা হয়। পাঁচটি মোটর সাইকেলে দুই লাখ ৯৪ হাজার টাকায় নিলাম করা হয়।