বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার বড় ছেলে তারেক রহমানের জন্মদিনে কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করলেন। ৫৩ পাউন্ড ওজনের ৭টি কেক কেটে ছেলের জন্মদিন উদযাপন করলেন খালেদা।
সোমবার (২০ নভেম্বর) দিনের প্রথম প্রহরে গুলশানে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে কেক কাটার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত নেতা-কর্মীরা মুহুর্মুহু করতালি ও ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ শ্লোগান দিয়ে তারেক রহমানকে শুভেচ্ছা জানান।
কেক কাটার পর মোবাইল ফোনে ছেলের সাথে কথা বলেন খালেদা জিয়া। পরে মহাসচিবসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ তারেক রহমানকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান।
এটি ছিল তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মদিন। ২০০৮ সাল থেকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে রয়েছেন তারেক। প্রথম প্রহরে গুলশান কার্যালয়ের ভেতরে নেতৃবৃন্দ অবস্থান নিলেও নেতা-কর্মীদের কেক কাটার মূল অনুষ্ঠান বাইরে বড় পর্দায় দেখানো হয়।
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি, মহানগর দক্ষিণ, মহানগর উত্তর, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল ও ছাত্রদলের আলাদা আলাদা ৬টি বড় আকারের কেক টেবিলে রাখা হয়। পরে রাত ১২টায় এক মিনিটে কেক কাটেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
বিএনপির কেকটি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে কাটেন। পরের কেকগুলো পর্যায়ক্রমে কাটেন অঙ্গসংগঠনের নেতাদের নিয়ে। তখন দলের নেতা-কর্মীরা ‘শুভ শুভ জন্মদিন, তারেক রহমানের জন্মদিন’ শ্লোগান দেন।
কেক কাটার অনুষ্ঠানে অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া দলের জ্যেষ্ঠ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, গিয়াসউদ্দিন কাদের চোধুরী শওকত মাহমুদ, জয়নাল আবেদীন, আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরফত আলী সপু, বিশেষ সহকারি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির অঙ্গসংগঠনের মধ্যে মহানগর দক্ষিণের হাবিব উন নবী খান সোহেল, কাজী আবুল বাশার, উত্তরের মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, আহসানউল্লাহ হাসান, যুবদলের সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, ছাত্রদলের রাজিব আহসান, আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ নেতারা।
পরে তারেক রহমানের দ্রুত আরোগ্য কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। কেক কাটার পর ৭টি কেক এতিমখানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালের ২০ নভেম্বর তারেক রহমানের জন্ম। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে তারেক লন্ডনের সাউথ ওয়েলিংটন হসপিটালে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিতে লন্ডনে অবস্থান করছেন পরিবারকে নিয়ে।
এই অনুষ্ঠানে মহানগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, শ্রমিক দল, ছাত্রদলের কয়েকশ নেতা-কর্মী কার্যালয়ের বাইরে সমবেত হন।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে মার্চ মাসে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় যৌথ বাহিনি তারেক রহমানকে গ্রেফতার করার পর তিনি কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগ থেকে জামিন নিয়ে তারেক চিকিৎসার জন্য পরিবার নিয়ে লন্ডন যান ওই বছরের সেপ্টেম্বরে।
তারেকের জন্মদিন উদযাপনে বিএনপি ২ দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এরমধ্যে আছে- সোমবার সারাদেশে মহানগর ও জেলা সদরে তারেকের আশু আরোগ্য ও সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল ও আগামী শনিবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে রমনার ইন্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে আলোচনাসভা।
এ ছাড়া ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) সোমবার সকাল থেকে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে ‘ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প’ এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ করবে।
সারাদেশে মহানগর, জেলা, থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো তারেকের জন্মদিন পালনে কর্মসূচি গ্রহণ করবে বলে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে জানানো হয়।
Comments
comments
